‘সাবেক আইনমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৫ (বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া) আসনের এমপি অ্যাড. আবদুল মতিন খসরু করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে মারা গেছেন’- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এমন গুজব ছড়ানোসহ তাকে নিয়ে আপত্তিকর ও মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগে বুড়িচং থানায় ৩ যুবকের বিরুদ্ধে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে মামলা হয়েছে।
এ মামলায় বুড়িচং উপজেলার বাকশীমুল গ্রামের শামসুল হকের ছেলে ফরহাদ খান (২৩) ও ঘোষনগর গ্রামের মৃত আবদুল ওয়াহিদের ছেলে মাহফুজ বাবুকে (৩৩) গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ভূঁইয়ার ছেলে ছাত্রলীগ নেতা মো. আল আমিন ভূঁইয়া বাদী হয়ে বুধবার রাতে এ মামলাটি দায়ের করেন। কুমিল্লা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলামের নির্দেশে রাতেই মামলাটি তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা ডিবির এসআই পরিমল চন্দ দাস বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এসব বিষয় নিশ্চিত করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত বুধবার ‘সাবিয়া রেহমান’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট দেয়া হয় ‘আমরা অত্যন্ত দু:খের সাথে জানাচ্ছি যে- এডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপি ৮দিন করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে ৭ এপ্রিল ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে মারা গেছেন—-’। পরে ওই আইডির ফ্রেন্ড লিস্টে থাকা এজাহারনামীয় ২নং আসামি ফরহাদ খান (Farhad Khan) কমেন্টসে লিখেন ‘হালায় মরলে তো বালো ছিল, এখন নির্বাচন হলে দেখতেন,, মানুষের বাড়ি বাড়ি যাইতো,,’। মামলায় এজাহার নামীয় ৩নং আসামি মাহফুজ বাবু তার নামের আইডি (মাহফুজ বাবু) দিয়ে লিখেন- ‘ইন্না লিল্লাহ ওনার টাকা পয়সা গুলো এখন দেশের গরীবদের বিলিয়ে দিয়ে পাপসাপ মাপ নিয়া দরকার’।
মামলার বাদী মো. আল আমিন ভূঁইয়া জানান, মামলায় অভিযুক্তরা পরস্পর যোগসাজসে ফেসবুকে মিথ্যা গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে জীবিত এমপি মতিন খসরুকে মৃত ঘোষণা দিয়ে তাকে সামাজিক, পারিবারিক ও রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছেন। মামলায় প্রধান অভিযুক্ত আসামি সাবিয়া রেহমানের আইডির বিষয়ে তদন্ত করে তাকেও গ্রেফতারের দাবি করেছেন তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই পরিমল চন্দ্র দাস জানান, গ্রেফতারকৃত ফরহাদ খান ও মাহফুজ বাবুর মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা অভিযোগ স্বীকার করেছে। দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করার পর বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তিনি আরও জানান, এজাহার নামীয় সাবিয়া রেহমানের নাম-ঠিকানা এখনো জানা যায়নি। পরিচয় শনাক্ত করে তাকেও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু এমপির সেলফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও রিসিভ না হওয়ায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।